গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (নতুন সংস্করণ) - ভাব-সম্প্রসারণ | | NCTB BOOK
88
88

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।

ভাব-সম্প্রসারণ: ধন-সম্পদ যদি নিজের নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে দরকারের সময়ে তা কোনো কাজে আসে না। একইভাবে জ্ঞান যদি শুধু বইয়ের পাতায় আটকে থাকে, সে-বিদ্যা ব্যক্তি তার নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পারে না।

মানুষের অভিজ্ঞতা ও প্রমাণ-লব্ধ জ্ঞান বইয়ের মধ্যে সঞ্চিত থাকে। বই পাঠ করলে পৃথিবীর সব ধরনের জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। কেউ যদি নিয়মিত বই পড়ে তাহলে সে ধীরে ধীরে নিজেকে জ্ঞানী করে তুলতে পারবে। বই থেকে অর্জিত এই জ্ঞান দিয়ে সে নিজের বা অন্যের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম। বই থেকে আহরিত জ্ঞান থেকে সে নিজে যেমন আলোকিত হতে পারে, অন্যকেও আলোকিত করতে পারে। কিন্তু জ্ঞান যদি বইয়ের মধ্যেই শুধু আবদ্ধ থাকে, তাহলে তা কারো কোনো কাজে আসে না। ধরা যাক, কোনো ব্যক্তি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে হাজার হাজার বই কিনলেন আর তা দিয়ে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করলেন। লাইব্রেরির তাকে তাকে বইগুলোকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখলেন। কিন্তু জ্ঞানের কোনো বিষয়ে কেউ যদি তাঁকে প্রশ্ন করে, তিনি তার যথাযোগ্য জবাব দিতে ব্যর্থ হবেন। আবার বইয়ের বিদ্যা না বুঝে কেবল ঠোঁটছ বা মুখস্থ করলেই হবে না। এই বিদ্যার প্রায়োগিক দিকটিও উপলব্ধি করতে হবে। অনেকটা জায়গা-জমি বা অর্থের মতো। নিজের সম্পদ-সম্পত্তি অন্যের হাতে থাকলে তা ভোগ করা যায় না। অন্যের কাছে থাকা অর্থ আর বইয়ের পাতার সীমাবদ্ধ জ্ঞান এভাবে সমার্থক হয়ে যায়।

বইকে শুধু পরীক্ষা পাশের উপকরণ মনে করলে চলবে না। বইয়ের জ্ঞানকে জীবনে কাজে লাগাতে পারলে তবেই সার্থকতা।

Content added By
Promotion